গ্রামীণ সমাজ উন্নয়ন পরিষদ এর আয় বর্ধনশীল কর্মকান্ড
মূল লক্ষ্যঃ
বাস্তবতার নিরীক্ষে গ্রামীণ সমাজ উন্নয়ন পরিষদ “গ্রাসউপ” মহিলাদরে সার্বিক কল্যানে বিশ্বাসী একটি অন্যতম সংগঠন। প্রথম দিকে মূলত মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবাই ছিল এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য এছাড়াও জীবনযাত্রা মান উন্নয়নে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান, পরিবেশনার উন্নয়নকল্পে বিভিন্ন সভা ও সেমিনার সমাজের শিক্ষিত বিপদগামী যুবক সহ সকলকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষন প্রদানের মাধ্যমে পূনবাসন প্রক্রিয়ায় সাহায্য প্রদান। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় যে, শুধু স্বাস্থ্য সেবা এবং অন্যান্য সকল বিষয়ে পরামর্শ দান সাপেক্ষে জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন সম্ভব নয় সব দুঃস্থ অসহায় মহিলাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সংগে সক্রিয়ভাবে যুক্ত করে শক্তিশালী করতে পারলে জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন সম্ভব ভেবেই “গ্রাসউপ”
অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কিছু পরিকল্পনা হাতে নেয়। এই প্রকল্পগুলি বাস্তবে রূপ নেওয়া দেওয়া অতি দুরহ হওয়া সত্বেও “গ্রাসইপ” নামের এই ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানটি নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে ছোট ছোট আকারে গড়ে তুলেছে মৎস্য চাষ প্রকল্প, সেলাই শিক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বনায়ন, বৃক্ষরোপন ও নার্সারী প্রকল্প ক্ষুদ্র কুটির শিল্প প্রকল্প এবং হাঁস মুরগী পালন প্রকল্প। এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের জন্য তৈরী করে তাদেরকে সামান্য পরিমান ঋণ প্রদান করা এবং মহিলাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহনের মাধ্যমে সামাজিক অবস্থান সুদৃঢ় করাই হল এর মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। এই সব কার্যক্রম গ্রহনের ফলে দেখা গেলো প্রকল্প এলাকার গ্রুপ সদস্যরা সমাজে নিজেদের অকাল মৃত্যু স্বামী নির্যাতন পারিবারিক আর্থিক স্বচ্ছলতা, যৌতুকপ্রথাসহ নানা অপকর্ম থেকে মহিলাদের পরিত্রান পাচ্ছে। সুতরাং “গ্রাসউপ” যে, মূল দক্ষ দরিদ্র অসহায় এবং সমাজের অবহেলিত মহিলাদের উন্নত জীবন গঠন করা তার অনেকটা সফলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। শুধু মহিলারাই নয় এলাকার বেকার ও শিক্ষিত ও এই সব প্রকল্পের সাথে যুক্ত রয়েছে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আয় বর্ধেক প্রকল্পের মধ্যে আরও আছে, মার্কেটিং প্রকল্প, বিজ্ঞাপন এজেন্সি(দৈনিক আজকের আলোকিত সকাল) ইত্যাদি।
পুরুষদের পাশাপাশি বিভিন্ন কার্যক্রমে নারীদের অন্তর্ভূক্ত করার য্যেক্তিকতাঃ
সমাজ উন্নয়নের ধারায় অতীতে নারীর অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন যেমন গুরুত্বপূর্ন অবদান প্রদান রেখেছে তেমনি বর্তমানে তাদের ভূমিকা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষির আবিস্কার ও বিকাশ ঘটেছে নারীর হাতে এটা সর্বজন স্বীকৃত। সমাজের সকল বাধা অতিক্রম করে পুরষদের পাশাপাশি নারীরাও সমভাবে অর্থতৈকি কর্মকান্ডে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহন করে চলেছে। বর্তমানে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নারীদের কাজের ধরন ও ব্যাপ্তি কত বিশাল এবং ব্যাপক তা একটু খানি খতিয়ে দেখলেই অনুধাবন করা সম্ভব হবে। অফিস আদালত থেকে শুরু করে কল-কারখানা, চা-বাগান ও ক্ষেতে খামারে সর্বত্রই নারীদের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। তা সত্বেও নারী শ্রম শক্তিকে সাময়িকভাবে তেমনভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। সামাজিক ভাবেও নারীরা আজো অবহেলিত। শুধু তাই নয় পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা এখনও করুনার পাত্র। অথচ এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, পৃথিবীর সম্পূর্ন মানবিক শ্রমে নারী পুরুষের অনুপাত ২ঃ১ অথাৎ মোট শ্রমের ১ ভাগ পুরুষ এবং ২ ভাগ নারী দ্বারা সম্পাদিত। এই নারী শ্রমকে উপেক্ষা করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তোলা প্রায়ই অসম্ভব। এ বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষাপটে আমাদের জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা লক্ষ্যে নারীদের সামাজিক অবস্থার আমুল পরিবর্তনের জন্য সরকারী ও বেসরকারীভাবে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন। “গ্রাসউপ” তার আদর্শ ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সমাজের দুঃস্থ অসহায় মহিলাদেরকে বিভিন্ন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করে তাদেরকে সাবলম্বী করে গড়ে তোলা খুবই অপরিহার্য বলে মনে করে।
আয় বর্ধনশীল কার্যক্রমের য্যেক্তিকতাঃ
তৃতীয় বিশে^র উন্নয়নশীল সবকয়টি বৈশিষ্ট্য আমাদের দেশেও বিদ্যমান। জনসংখ্যার দ্রুত বিষ্ফোরনের ফলে শিক্ষিত অশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর অবস্থায় রূপ নিয়েছে। ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের অভিশাপে অভিসপ্ত এই বাংলাদেশ।
“গ্রসউপ” মানব সেবায় দ্রুত সেবায় ব্রত হয়ে উল্লেখিত সমাজকল্যাণ এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সমূহের বাস্তবায়ন করে আসছে। তাই কঠিন বাস্তবতা এবং অতি প্রয়োজনের তাগিদেই এই প্রকল্পগুলি গ্রহণ করা প্রয়োজন হয়ে উঠেছে। জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন আজ এতই ব্যয়সাধ্য যে একা পুরুষদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না, তাই প্রয়োজন নিশ্চিত করে মহিলাদেরও বিভিন্ন আয় বর্ধনমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা যার মাধ্যমে পরিবারের আয় বৃদ্ধি সহ, পারিবারিক শান্তি ও সমৃদ্ধি ফিরে আসবে অপর দিকে শিশু শ্রম হ্রাস পাবে এবং শিক্ষার আলো বৃদ্ধি পাবে।
কার্যাবলী কার্যাবলীর বিশ্লেষণঃ
তৃতীয় বিশে^র উন্নয়নশীল দেশগুলির মডেল হিসেবে বিবেচিত, সাড়ে বারো কোটি জনসংখ্যা অধ্যষিত ক্ষুদ্র এই দেশ। আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে জন্মহার ২.০৫। যাহা একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্যই খুবই বেশী। দরিদ্রপীড়িত ঋণভারে জর্জরিত এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনার মাধ্যম “গ্রাসউপ” নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণকরে। “বিত্তহীন জনকল্যানে কাজ এর একমাত্র উদ্দেশ্য দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন যার ফলে “গ্রাসউপ” এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে একবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে।। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ব্যতীত জাতীয় উন্নয়ন আশার করা যায় না।